কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক
কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক?প্রিয় পাঠক আপনি কি হাঁস পালনে আগ্রহী? আপনি কি জানতে চান যে কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক? আজকে আমরা কোন জাতের হাঁস পালন আপনার ব্যবসা কে করে তুলবে লাভবান। এবং আপনি হবেন একজন সফল ব্যবসায়ী চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।শুধু তাই নয় কোন জাতের হাঁস পালন করে আপনি আপনার ব্যবসাকে সফল করে তুলতে পারেন সে সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত বলা হয়েছে তাই ধৈর্য ধরে মনোযোগ দিয়ে পোস্টটি পড়ুন আশা করছি আপনি জানতে পারবেন কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক।
ভূমিকা
বিভিন্ন জাতের হাঁসের মধ্যে কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক যদি আপনি জানতে পারেন তবেই, আপনি লাভবান এবং সফল হতে পারবেন।বেইজিং জাতের হাঁসটি বর্তমান সময়ে খুবই জনপ্রিয় উঠেছে চায়না থেকে আগত এই জাতের হাঁস পালন করে অধিক লাভবান হচ্ছেন খামারিরা।এই হাস একটি জনপ্রিয় প্রাচীন হাসের জাত, এটি প্রথম চীনে ডেভেলপ হয়েছিল । বর্তমানে এটি অন্যতম বাণিজ্যিক হাসের জাত।আরো কিছু নামে পরিচিত যেমন বেলজিয়াম হাঁস ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: কমলা খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা
বিদেশী জাতের হাঁস আমাদের দেশেও লালন-পালন করা যাবে আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়াতেও পারবে নিঃসন্দেহে আমাদের দেশে এই বেইজিং জাতের হাঁস লালন পালন করা খুবই সহজ এবং কোন প্রকারের প্রতিকূলতার সৃষ্টি হবে না।
বেইজিং হাঁসের তথ্য
তাহলে আসুন এই বেইজিং হাঁস সম্পর্কে বিশেষ বিশেষ কিছু জেনে নিই।বর্তমান সময়ে বেইজিং জাতের হাঁস পালন অন্যান্য হাঁসের থেকে অনেক বেশি লাভজনক। এই জাতের হাঁসটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বেইজিং জাতের হাঁস পালন করে বর্তমান সময়ে অধিক লাভজনক হচ্ছে খামারিরা। তাই যদি কেউ আপনাকে প্রশ্ন করে, কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক তাহলে আপনি এক কথায় উত্তর দিয়ে দিতে পারেন বেইজিং জাতের হাঁস।
তবে কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক, তা নির্ভর করছে আপনি কি উদ্দেশ্যে হাঁস পালন করতে যাচ্ছেন তার উপর। বর্তমান সময়ে অনেক বেকার যুবক-যুবতী হাঁস-মুরগি পালন সহ গরু ছাগল বিভিন্ন জাতের গৃহপালিত পশু নিয়ে ব্যবসায়িক বা উদ্যোক্তা হওয়ার মনোভাব তৈরি করছেন। যারা মূলত ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে হাঁস পালন করতে যাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে আজকের এই পোস্ট আপনারা চাইলে এই বেইজিং জাতের হাঁস পালন করে দেখতে পারেন।
বেইজিং জাতের হাঁস বিশ্বব্যাপী পরিচিত, এবং এ জাতের হাঁস পালনের মাধ্যমে, বাংলাদেশের অনেক খামারি লাভবান হচ্ছেন। বিশেষ করে যে সমস্ত বেকার যুবক-যুবতীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে হাঁস পালন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা নিঃসন্দেহে এই বেইজিং জাতের হাঁস পালন করতে পারেন।কেননা এই বেইজিং জাতের হাঁস খুব অল্প সময়ের ডিম এবং মানুষের জন্য উপযোগী হয়ে যায়। যা প্রত্যেকটা ব্যবসায়ীর একান্ত কাম্য।
আসুন তাহলে জেনে নিই এই বেইজিং জাতের হাসির কিছু তথ্য এবং এ জাতের হাঁস পালনের সুবিধা।
আরো পড়ুন: অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোডের নিয়ম
বেইজিং হাঁসের বৈশিষ্ট্য
এ জাতের হাঁসের শারীরিক গঠন অনেক সুন্দর হয়। বেইজিং জাতের হাঁস ভারী যাতে শ্রেণীতে রয়েছে, দীর্ঘ দেহ এবং বেশি দীর্ঘ ঘাড় রয়েছে এ জাতের হাঁসের। এ জাতের হাঁসের বুকে প্রচুর পরিমাণে মাংস থাকে এবং ত্বক হয় হলুদ। পালক হয় সাদা বা হালকা হলুদ ধরনের।এ জাতের হাঁস প্রায় ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
অন্যান্য হাঁসের চাইতে এ জাতের হাঁস তুলনায় অনেক বেশি মাংস দেয়।বেইজিং জাতের হাঁসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো খামারিরা মাংস এবং ডিম উভয়ের জন্যই এ জাতের হাঁস পালন করতে পারেন।বেইজিং জাতের হাঁস ২.৪ থেকে ৩.৫ কেজি ওজন পর্যন্ত হতে পারে।
বেইজিং জাতের হাঁসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এরা খুব বুদ্ধিমান ও সতর্ক এদের কাছাকাছি যদি কোন শিকারে পাখি আসে তাহলে সে সম্পর্কে অন্য হাদিসদেরকে সতর্ক করতে পারে এবং উচ্চ স্বরে চিৎকার করতে পারে।
বেইজিং হাঁস পালনের সুবিধা
- বেইজিং হাস খুব দ্রুত বাড়ে।
- এ জাতের হাঁসের বুকের মাংসের সাইজ বড় হয়।
- বেইজিং হাঁসের ডিম বেশ বড় এবং সুস্বাদু। প্রায় তিন থেকে চার বছর বয়স পর্যন্ত ডিম দেয়।
- ডিম উৎপাদন কম হলে দুই বছর পর হাসগুলো মাংস হিসেবে আপনারা চাইলে বিক্রি করে দিতে পারেন।
- বেইজিং জাতের হাঁস খুবই দ্রুত এডাল্ট হয়, মাত্র সাড়ে তিন মাসেই এরা ডিম দিতে পারে
- অন্য জাতের হাঁসের সাথেও একত্রে পালন করা যাবে।
- অন্যান্য হাঁসের থেকে বেইজিং জাতের হাঁস প্রচুর ডিম এবং মাংস দিতে পারে।
- এ জাতের হাঁস বছরে ২৫০ টি থেকে ৩০০ টি পর্যন্ত ডিম দিতে পারে।
বেইজিং হাঁসের খাবার
আমিষ জাতীয় খাদ্য দেহ কোষ গঠনে ব্যবহৃত হয়। দেহে নতুন কোষ গঠন, ক্ষয়প্রাপ্ত কোষ পুনর্গঠন ও নবায়নে আমিষ প্রয়োজন। হাঁসের খাদ্যে প্রাণিজ উৎস ও উদ্ভিজ্জ উৎস হতে আমিষ জাতীয় খাদ্য মিশ্রণ তৈরি ব্যবহার করা হয়। উৎসের মধ্যে সাধারণত, সয়াবিন মিল, তিলের ও অন্যান্য তৈল বীজের খোল, তোলা বীজের খোল সবুজ শাকসবজি, ডাক উইড, অ্যাজল ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়।
অন্যদিকে প্রাণীজ উৎস হতে সাধারণত শুটকি মাছের গুড়া প্রোটিন কনসেনট্রেট শামুক ও ঝিনুকের মাংসল অংশ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। হাঁসের খাদ্যে অবশ্যই ভিটামিনের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করার গুরুত্ব রয়েছে। কেননা ভিটামিন কোষের কার্যক্রম সুরক্ষিত করে। ষাট থেকে 70 ভাগ পানি থাকে, তাই খাদ্যের সাথে পর্যাপ্ত পানি থাকা অত্যন্ত জরুরী।
অন্যান্য হাঁস যা খাবার খায়, বেইজিং হাঁস ঠিক সেই খাবারই খায়। নিচে হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সহ হাঁসের পুষ্টি এবং পুষ্টি নির্দেশনা তুলে ধরা হলো।
- ভুট্টা ভাঙ্গা।
- রাইস পালিশ।
- সয়াবিন মিল।
- প্রোটিন কনসেনট্রেট।
- লাইসিন।
- ঝিনুক চূর্ণ।
- লবণ।
- ভিসিপি।
- ভিটামিনের প্রিমিক্স।
- গমের ভুসি
- শুটকি মাছের গুড়া ।
- তিলের খোল।
- চালের কুড়া।
- গম ভাঙ্গা।
অন্যান্য হাঁস প্রতিনিয়ত যা খায়, নিয়মিতভাবে উপরের খাবারগুলো বেইজিং হাঁসকে খাওয়ালে বেশ ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
ডিম ও মাংসের জন্য বেইজিং হাঁস
ডিম ও মাংসের জন্য বেইজিং হাঁস আপনার জন্য সেরা হতে পারে। কারণ বেইজিং হাঁস টানা তিন থেকে চার বছর ডিম দিতে পারে।
বিশেষ করে খাবার মাংস এবং ডিমের জন্য এ হাঁস প্রচুর পরিমাণে খামারিরা পালন করছে, বর্তমান সময়ে অধিকাংশ বাংলাদেশি খামারিরা যারা হাঁস পালন করে তারা এই বেইজিং জাতের হাঁস পালন করে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছে।
কারণ বেইজিং হাঁস দেড় মাস বয়স থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে, আবার অন্যদিকে এদের মাংস অনেক সুস্বাদু এবং ওজনেও বেশি হয়ে থাকে। আর তাই বর্তমান সময়ে ধরা হয় বেইজিং হাঁস অনেক বেশি লাভজনক।
বেইজিং হাসের রোগ
বেইজিং হাঁসের একটি প্রধান বা মারাত্মক অসুখ হচ্ছে ডাক প্লেগ। বেইজিং হাঁসের এ রোগ হলে হাঁসের পা অবশ এবং প্যারালাইজড হয়ে যায়। যার ফলে হাঁস খাওয়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়, এবং অচিরেই মৃত্যু হয়। তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণের ভ্যাকসিন রয়েছে অসুখ হবার পূর্বেই বেইজিং হাঁসকে ভ্যাকসিন দিয়ে দিতে হবে, ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে ২৫ দিন বয়সে প্রথম রোজ এবং৪০ দিন বয়সে তার পরবর্তী সময়ে প্রতি চার মাস পরে ডাক প্লেগ রোগের টিকা দিলে এই রোগ থেকে নির্মূল হওয়া সম্ভব।
লেখক এর মন্তব্য
এখন আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন কোন জাতের হাঁস পালন বেশি লাভজনক।আপনার খামারের জন্য বেইজিং হাঁস হতে পারে এক অনন্য পছন্দ, যা অন্যান্য হাঁসের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত বাড়ে এবং ডিম ও দেয় অনেক বেশি।এদের মাংস এবং ডিম অনেক বেশি সুস্বাদু হয়ে থাকে, আর তাই ধরা হয় বেইজিং জাতের হাঁস পালন অধিক লাভজনক।
পোস্টটি পড়ে যদি আপনি একটুও উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব পরিবার পরিজনের সাথে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url